geeta
lakshmi puja 2020 - লক্ষ্মীপূজা 2020
লক্ষ্মীপূজা
লক্ষ্মী শব্দের অর্থ শ্রী , সম্পদ, বৈভব ইত্যাদি। এই শ্রী বা সম্পদ পাওয়ার জন্য প্রতি ঘরে ঘরে লক্ষ্মীমাতার পূজার্চনা বা আরাধনা হয়ে আসছে বহু দিন ধরে। কিন্তু এই শ্রী বা সম্পদ ছিল দেবতাদের অধিকার ভুক্ত।
একদিন মুনি দুর্বাসা স্বর্গরাজ্য ভ্ৰমণ করতে করতে নন্দনকাননে উপস্থিত হয়। সেখানে পারিজাত পুস্প দেখে অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়ে পুষ্পচয়ন করে একটি মালা গাঁথে এবং সেটি ছুড়ে দেয়। মালাটি গিয়ে পড়ে দেবরাজ ইন্দ্রর কাছে৷ সেই সময় তিনি অপ্সরা রম্ভার সজ্ঞে রম্ম বিহারে ব্যাস্ত থাকায়,রেগে মালাটি ছুঁড়ে দেয়৷ মালাটি গিয়ে পড়ে ঐরাবতের গলায়৷ ঐরাবত এই মালার গুরুত্ব না বুঝে পায়ে ফেলে পিষে নষ্ট করে দেয়৷ এদিকে দুর্বাসা মুনি এই সকল ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ও অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে অভিসম্পাদ করে বলে ,"শ্রী ভ্ৰষ্ট হও'।তৎক্ষণাৎ ইন্দ্র সহ সকল দেবতারা শ্রী ও সম্পদ চ্যুত হয়ে ,দীন দরিদ্র এর জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। নিরুপায় হয়ে সকল দেবতাগন মিলে ব্রহ্মা ,বিষ্ণু ,মহেশ্বর এর কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়।
এদিকে লক্ষ্মীও স্বর্গ ভ্ৰষ্ট হয়ে পাতাল (সমুদ্রের তলদেশে) গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সমুদ্ররাজ্ রত্নাকর তাকে কন্যা রূপে আশ্রয় দেন৷ পরে সাগররাজ্ রত্নাকর কন্যা হিসাবেই দেবী লক্ষ্মীকে ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে বিবাহ দেন। তাই লক্ষ্মী দেবীর আর এক নাম সাগর কন্যা। তাইতো এখনো আমরা দেখি সমুদ্রে সম্পদের আকর। এদিকে দেবতাদের এই রূপ দীন হীন অবস্থা দেখে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এর মনে দয়ার উদ্রেক হয়।বিষ্ণু জানতে পারেন যে শ্রী বা লক্ষ্মী এখন পাতালে অবস্থান করেছেন। তিনি দেবতাদের পরামর্শ দেন যে সমুদ্র মন্থন ছাড়া লক্ষ্মীকে আনয়ন করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। তাই যে ভাবে হোক সমুদ্র মন্থন করতে হবে। তারপর ভগবান বিষ্ণু (নারায়ণ) এর পরামর্শ অনুযায়ী সুকৌশলে অসুরদের সম্মতি আদায় করে, "মৈনাক" পর্বতকে মৈথূন দন্ড ও "বাসুকিনাগ' কে মৈথূন রশ্মি করে ক্ষির সমুদ্র মন্থন করলে, ঐশ্চর্যশালিনী দেবী লক্ষ্মীর পুনরাবির্ভাব হয় এবং তিনি নারায়ণ (বিষ্ণুর) বাম পার্শ্বে অবস্থান করেন।
মর্তধামে মানুষ ধন , ঐশ্চর্য লাভের জন্য লক্ষ্মী দেবীর পূজার্চনা করে থাকে। ভারতের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা গুলিতে দ্বিভুজ লক্ষ্মীদেবীর পূজা হয়ে থাকে৷ কিন্তু অন্যান্য বেশির ভাগ রাজ্যে চতুর্ভুজ লক্ষ্মী দেবীর পূজা হয়। আগে লক্ষ্মী দেবীর বাহনকে নিয়েও সংশয় দেখা দিত। কখনও দেবীকে মৃগবাহিনী ,কখন সিংহবাহিনী ও নানান ভাবে পূজা করা হত। এখন স্থায়ীভাবে শ্বেতপেচক মায়ের বাহন হিসাবে পূজিতা হয়। যেহেতু পেচক দিবান্ধ কিন্তু অন্ধকারে দর্শনে সক্ষম৷ তাই কল্পনা করা হয় যে দেবীর ধন ঐশ্চর্য সুরক্ষিত রাখার জন্য অন্ধকারে দর্শনে সক্ষম শ্বেত পেচক উপযুক্ত বাহন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ
please do not enter any spam link in the comment box.