কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে

কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে ?

কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে ?

       
                            কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে ?  আমি শুধু কয়েকটা কথা আপনাদের কে বলতে চাই , তাই দয়া করে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি সকলের চরণে। 
          
                         প্রত্যেকটা কাজের কোনো না কোনো মাধ্যম থাকে , গাছ - আলো -বাতাস - জড় পদার্থ - জীবন  অথবা  মহাজীবন। আধ্যাত্মিক জগতে একজন মহাজীবনের প্রয়োজন হয় ;   যিনি জাগতিক জাগতিক যন্ত্রনায় জর্জরিত মানুষকে ঈশ্বরের চরণে  পৌছে দেন। অর্থাৎ তিনি হলেন গুরু।  কিন্তু আমি এসময়ের কোনো গুরুর কথা বলছি না। বলবো না তার কারন এদের ৯৯% কে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।  আপনারা ও অনেকে চেনেন যারা বর্তমানে জেলের শ্রীঘরে কাটাচ্ছে।
         
                    আমি বলতে চাই সেই গুরুর কথা যিনি আমাদের পরম স্নেহে হাত ধরে কৃষ্ণ অমৃত পান করা শিখিয়েছেন। তিনি আর কেউ নন - তিনি হলেন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু।  NOT OTHER HE IS ONE AND ONLY . অতএব সর্ব যুগের শ্রেষ্ঠ গুরু তিনি।

                           বৈষ্ণব শাস্ত্রে অতি উজ্জ্বল ভাবে উল্লেখ করা আছে যে মহাপ্রভু কে বাদ দিয়ে শ্রী কৃষ্ণনার্জন সম্ভব নয়। এখন কথা হলো কেউ যদি বলে মরুসম  জীবনে কৃষ্ণপূজা করে সোনালী ফসল  তুলব অথচ মহাপ্রভুকে শ্রদ্ধা করবো না , মানব না , সেটা কেমন করে হয় ? সোনার পাথর বাটির মতো অবিবেকি নয় কী ?

                         আমাদের দেশে বিভিন্ন স্থানে রাধা গোবিন্দের মন্দির বা হরিবাসর আছে। লক্ষ করে দেখবেন সেখানে যিনি প্রভুর সেবা করেন তাঁরা বেশির ভাগ ব্রাম্ভন সম্প্রদায় থেকে এসেছেন। যদিও এযুগে কেউ ব্রাম্ভন নয়। ব্রাম্ভন এর কাজ হলো পূজা করা। একজন ব্রাম্ভন শিবপূজা করছে , কৃষ্ণাপূজা করছে, আবার রাত্রিবেলায় কালী পূজাও করছে।কালী পূজায় মদ দেওয়া হচ্ছে ,পাঁঠা বলি হচ্ছে।

কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে ?


                               একটু গভীর ভাবে চিন্তা  করুন তো ,  ধরুন  আপনি কালীপূজা করলেন বামন বললো মদ চাই , মদ না হলে পুজো হবে না , মদ দিলেন।  পূজা শেষে  , সব প্রসাদ খেলেন কিন্তু মদটা খেলেন  না।  খেলেন না কারন আপনি মদ খান না।
                             আপনি অন্যায় করলেন আপনি অমার্জনীয় ভয়ঙ্কর অপরাধ করলেন , আপনি পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে পূজা করলেন সব বৃথা গেল কারন আপনি প্রসাদ ঘৃণা করেছন। 
                       একটা বাচ্চা ছেলে বোঝে প্রসাদকে ঘৃণা করা কতটা অপরাধ কিন্তু আপনি বুঝলেন না , তাহলে পূজাতে মদ দিলেন কেন ?           উত্তর হলো --- বামন বলেছে। বামন বলেছে তাই কালী পুজোয় মদ দিলেন , পাঁঠা বলি দিলেন।
                      
                           কিন্তু শাস্ত্র তো সে কথা বলে না।  আজও পর্যন্ত কোনো প্রামাণ্য গ্রন্থে সূরা বা পশু বলি র কথা লেখা আছে তা প্রমানিত হয়নি। একথা আমি খুব দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। কিছু দায়িত্ত্ব জ্ঞানহীন বামন-রা নিজের স্বার্থের জন্য এই প্রথা চালু করেছে। এটা অমানবিক মধ্যযুগের পাশবিকতা। আপনারা একটুও ভাবেন না আধুনিক প্রজন্ম এই কুসংস্কার এর হাত ধরে মদ - গাঁজা - ভান - সূরা তে আসক্ত হয়ে পড়েছে।

                           আমাদের সমাজে যত কুসংস্কার সবই বামন দের সৃষ্টি রাজপ্রাসাদ , বাল্যবিবাহ , সতীদাহ প্রথা, দাস প্রথা --সবই। এরা এই প্রথা গুলো কে ধর্মের মোড়ক দিয়ে নিজেদের স্বার্থে মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। আমরা আজও সেগুলো ঘাড় থাকে নামাতে পারিনি। অনেক আন্দোলন হয়েছে , অনেক প্রতিবাদ হয়েছে , আবার অনেক অত্যাচার নেমে এসেছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকে শাহিদ হয়েছে।

                         আমাদের ধৰ্ম আন্দোলন এর প্রথম শহীদ হলেন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব। মায়াপুর ডুবুডুবু , নদে ভেসে যায়, বামনদের চোখে ঘুম চলে গেল। একি হলো ! আ-চন্ডাল জনগণকে বুকে টেনে নিচ্ছে ! সবাই যদি এভাবে হরিনাম করে , তবে কেউতো আর কালীপূজা করবে না, মদ-মাংস খাওয়া হবে না আমাদের, সবাই সমান হলে আমাদেরতো কেউ মানবে না।  এটা চলতে দেওয়া যাবে না।

                        সময় তা ছিল প্রথম রথের পর উল্টো রথের ঠিক আগে। মহাপ্রভু পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ঢুকলেন, এটা  দু-একজন দেখলেন কিন্তু বেরোতে আর কেউ দেখেলেন না। জগন্নাথ মূর্তি ছিল না অথচ বলা হলো তিনি শ্রীমূর্তি তে বিলীন হয়ে গেছেন। কি হাস্যাস্পদ যুক্তি! হিন্দু সমাজে কি ভয়ঙ্কর লজ্জা ! ইতিহাসে হারালো এক বিদ্রোহী ঐতিহাসিক ব্যাক্তি, বৈষ্ণবরা হারালো তাদের ভগবান কে, মানুষ হারালো তাদের পরমগুরুকে।  আজও ভক্তরা শ্রীক্ষেত্রের দেওয়ালে মহাপ্রভুর রক্তের চিহ্ন দেখতে পায়।

                মহাপ্রভু কে খুন করা হয়েছিল। বামনরা তাকে মন্দিরের দেওয়ালে মাথা ঠুকে ঠুকে নির্মম ভাবে খুন করেছিল।

       আপনি কি জানেন আপনার গোবিন্দ মন্দিরে বা হরিবাসরে যে বামন পুজো করতে আসে সে কতটা চৈতন্য বিরোধী ? মহোৎসবের প্রসাদ খায় না কারন ওটা মহাপ্রভুর প্রসাদ , অহিংসার ধার ধারে না, ছাগ-মহিষ বলি দেয়, মদ -গাঁজা ইত্যাদি খায়। চৈতন্য বিরোধীদের দিয়ে কৃষ্ণাপূজা করিয়ে আপনার অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে কিনা আপনারাই বিচার করুন।

       দেখুন গোবিন্দ সব সহ্য করতে পারেন কিন্তু ভক্তের অপমান সহ্য করেন না, যে বামনরা আজও পর্যন্ত চৈতন্যদেবকে  ঘৃণা করে আসছে ; তাদের হাতের পূজাকি তিনি নিতে পারেন ? এভাবে আপনার পাপের বোঝা বাড়াবেন নাকি ওই বামনগুলোকে কৃষ্ণ মন্দির থাকে ঘাড় ধরে বার করে দেবেন, নাকি এখনো ভাববেন - বামনকে দিয়ে কৃষ্ণ মন্দিরে পূজা করানো যায় কিনা।তাহলে কৃষ্ণ পূজার অধিকার কী এ যুগের ব্রাম্ভণদের আছে ?


      সিদ্ধান্ত আপনার 





                           লেখক :-  দেবদাস চক্রবর্তী 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ